সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের মেরামতি ও নির্মাণ কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ঠিকাদাররা। গতকাল বৃহস্পতিবার বরাবর চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের সমিতি।
চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মো. সেকান্দর হোসেন। তিনি বলেন, কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সব ধরনের কাজ বন্ধ থাকবে। ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মো. সেকান্দর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, কিছু মাদকাসক্ত অছাত্রের চাঁদাবাজির বলি হচ্ছেন ঠিকাদারেরা। তারা রড, ইট, সিমেন্ট, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রী চুরি করছেন। তারা প্রকাশ্য ঠিকাদার, নির্মাণশ্রমিক, প্রকৌশলীদের মারধর করছেন। সর্বশেষ ২৩ আগস্ট এসব অছাত্র পুলিশের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে এক ঠিকাদারকে গালাগাল করেছেন। তাকে রড দিয়ে মারধরের চেষ্টা করেছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়, চাঁদাবাজির এসব অভিযোগ অতীতে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগ করায় শ্রমিকদের মারধর করে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী নিয়ে গেছেন চাঁদাবাজেরা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মালামাল লুট হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঠিকাদারেরা মানহানিসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব ঘটনার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারেরা সর্বসম্মতিক্রমে সব মেরামত ও নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী এসএম ফোরকান বলেন, নির্দিষ্ট কিছু বিষয় উল্লেখ করে ঠিকাদার সমিতি একটা চিঠি দিয়েছে। উপাচার্য ম্যাম না থাকায় দেখাতে পারিনি। রবিবার আসলে দেখানো যাবে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির কারণে ঢালাওভাবে কোনো সংগঠনকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। নিউজের ভিত্তিতেও কাউকে দোষী বলা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে যদি কোনো ছাত্রলীগের দোষ প্রমাণিত হয়। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সি চাঁদার দাবিতে হেনস্তা করেন বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে। একইদিন ওই নেতার মারধরের শিকার হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর ফজল। দুই ঘটনায় ওই দিনই হাটহাজারী থানায় রাজু মুন্সি ও অজ্ঞাতনামা দুইজনের নামে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।