সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক
আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিলেটে আগে ব্যাট করে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে রশিদ খানের দল। জবাবে শেষ ওভারের নাটকীয়তা শেষে এক বল বাকি থাকতেই ২ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। এই ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার রনি তালুকদার সরাসরি বোল্ড হয়। ৫ বল মোকাবিলা করে মাত্র ৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডানহাতি এই ওপেনার। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন লিটন দাস। তবে দলীয় ৩০ রানে স্পিনার মুজিবের বলে বোল্ড হন তিনি। যাওয়ার আগে ১২ বলে এক ছক্কায় ১৪ রান করেন তিনি।
লিটন কুমার দাশ চেষ্টা করেছিলেন শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে। কিন্তু তিনিও ফিরে যান দলীয় ৩৯ রানে ১৯ বলে মাত্র ১৮ রান করে। লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাওহিদ হৃদয়। ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলের পর শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টি থামলে আবার খেলা শুর হয়।
এরপর কিছুটা রানের গতি বাড়িয়ে ব্যাট করতে থাকেন সাকিব। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক। দলীয় ৬৪ রানে ১৭ বলে ১৯ রান করে ফরিদ আহমেদের বলে করিম জানাতকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
সাকিব বিদায় নেওয়ার পর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাওহীদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারী। দুজনে মিলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। আফগান বোলারদের কোনো সুযোগই দেননি তারা। তবে দলীয় ১৩৭ রানে ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করে আউট হন শামিম। এরপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের দিকে নিয়ে যায় হৃদয়।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬ রান। হাতে ছিল ৫ উইকেট। বল হাতে করিম জানাত। ওভারের প্রথম বলে ৪ মারেন মিরাজ। এরপর টানা তিন বলে মিরাজ, তাসকিন ও নাসুমের উইকেট তুলে নিয়ে নাটক জমিয়ে তোলে এই আফগান পেসার। টাইগার সমর্থকদের শঙ্কা ফেলে দেন। তবে পরের বলে শরিফুল ইসলাম বাউন্ডার মেরে দলকে ম্যাচ জেতান। হৃদয় ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ৪৭ রান করে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন।
আফগানিস্তানে হয়ে নেন করিম জানাত তিনটি এবং ফজল হক ফারুকি, মুজিবুর রহমান, রশিদ খান, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও ফরিদ আহমেদ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে শুরু থেকে কোণঠাসা করে রাখে টাইগার বোলাররা। তবে প্রথম উইকেটে দেখা পায় তৃতীয় ওভারে। নাসুমের দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় বলে স্কয়ার লেগে তৌহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জাজাই। এরপর চতুর্থ ওভারে তাসকিনের করা স্লোয়ার বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন গুরবাজ। এই আফগান ব্যাটারের ব্যাট থেকে থেকে এসেছে ১১ বলে ১৬ রান। নতুন ব্যাটার ইব্রাহীম জাদরানকে দ্রুত ফিরিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। এই টাইগার পেসারের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি করা বলটি একটু বেশি বাউন্স হয়েছিল। সেটাই কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েছেন জাদরান। এরপর বোলিং আক্রমণে এসেই ৩ রান করা করিম জানাতকে আউট করেন টাইগার অধিনায়ক।
সাকিবের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ক্রিজ ছেড়ে বেড়িয়ে অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ছিলেন জানাত। তবে ব্যাটে-বলে ঠিক মতো করতে পারেননি। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় মিড অফে। লং অন থেকে দৌড়ে এসে সেই ক্যাচ নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
মাত্র ৫২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ নবি ও নাজিবউল্লাহ জাদরান মিলে আফগানিস্তানের হাল ধরেন। এই দুজনে যোগ করেন ৩৫ রান। মিরাজের করা শর্ট ডেলিভারিতে ২৩ বলে ২৩ রান করা নাজিবউল্লাহ কাট করতে গিয়েছিলেন।
যদিও তা ঠিক মতো হয়নি। উল্টো ব্যাটের নিচের কানা ছুঁয়ে ঊরুর সামনের অংশে লেগে বল যায় লিটনের হাতে উইকেটের পেছনে। লিটনও ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক দৃষ্টিনন্দন ক্যাচ নেন। এরপর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ঝড় তুলে দেন মোহাম্মদ নবি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
এর মধ্যে সাকিবের করা ১৯তম ওভারে টানা তিন বলে ছকা হাঁকান আজমতউল্লাহ। অবশ্য ওভারের শেষ বলে সাকিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন তাসকিনের হাতে। শেষ ওভারে ৩ রান করা রশিদ খানকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে শেষ পর্যন্ত নবি ৫৪ রান করে অপরাজিত থেকে আফগানিস্তানকে ১৫৪ রানের লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।